শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০১ পূর্বাহ্ন
বরিশালের বানারীপাড়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মানসিক ভারসাম্যহীন শাপলা (৪০) (ছদ্মনাম) ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে সাড়ে সাত মাসের মৃত সন্তান প্রসব করেছেন। এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা মজনু শেখ বাদী হয়ে ১০ অক্টোবর রাত ৯ টায় বানারীপাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত একই ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী মোঃ মাহাবুব খলিফার ছেলে আলী হোসাইন খলিফা (১৯)। ভিকটিমের বাবা মজনু শেখ জানান, ২০ বছর আগে তার মেয়ে শাপলাকে (ছদ্মনাম) খুলনার মোবারক নামের এক জনের সাথে বিবাহ দিয়েছিলেন। তাদের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে বিভিন্ন সময় অশান্তি লেগেই থাকত,।তারই ধারাবাহিকতায় আনুমানিক ৫/৬ বছর পরে তার মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয় এবং সন্তানদের মায়ের কাছ থেকে তার পিতা রেখে দেয়। সেই থেকে শাপলা(ছদ্মনাম) বানারীপাড়ায় তার পিতামাতা কাছেই থাকতেছে। একদিকে সংসার হারানো অন্যদিকে সন্তানদের শোক সহ্য করতে না পেরে ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। মজনু শেখের বাড়িতে তার প্রতিবন্ধী স্ত্রী ও মেয়ে থাকে। মজনু শেখ আরও বলেন কাজের সন্ধ্যানে আমাকে প্রায়ই বাড়ির বাহিরে থাকতে হয়। এই সুযোগে গত ৮ থেকে ৯ মাসের মধ্যে অভিযুক্ত আলী হোসাইন তার মেয়েকে কয়েকবার জোর পূর্বক ধর্ষণ করে বলেও জানান। মজনু শেখ ও তার ছেলে হানিফ শেখ বলেন আমরা কাজের সন্ধানে বাহিরে বের হলে একদিন রাতে বাসায় ফিরে অন্য মানুষের উপস্থিতি টের পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে খাটের নিচ থেকে পা ধরে টেনে আলী হোসাইনকে হাতেনাতে ধরে ফেলি। তারও কিছুদিন পরে একই ভাবে বাসায় আমরা আসার সময় আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘরের জানালায় গ্রীল না থাকায় জানালা দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এই ঘটনা অভিযুক্ত হোসাইনের বাবা মাকে বহুবার জানানো হয়েছে। পরে গত কয়েকদিনে মজনু শেখের মেয়ের শারীরিক গঠন দেখে সন্দেহ হয়। পরে অভিযুক্ত হোসাইনের বাবা মাহাবুব খলিফাকে জানান তিনি। সবকিছু জেনে শুনে মেডিকেল পরীক্ষা-নিরিক্ষার জন্য নগদ ৪ হাজার টাকা মজনু শেখকে দেন মাহাবুব খলিফা। ৭ অক্টোবর বানারীপাড়ার আইডিয়াল ল্যাবে শারীরিক পরীক্ষা-নিরিক্ষা করানো হয়। পরীক্ষার ওই রিপোর্টে দেখা যায় মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন শাপলা (ছদ্মনাম) ৭ মাস ১৫ দিনের অন্তঃসত্ত্বা। এদিকে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সকালের দিকে ওই মহিলার পেটে অসহ্য যন্ত্রণা অনুভব হলে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। এর কিছু সময় পরে একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব করেণ। এদিকে ঘটনা জানাজানি হলে অভিযুক্ত হোসাইন খলিফা এলাকা থেকে থেকে সটকে পড়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন ওই ভারসাম্যহীন মহিলার বাবা,ভাই ও ভাবি আমাকে বিষয়টি জানালে আমি তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা দায়েরের সকল প্রস্তুতি নিতে আমার অফিসারদের নির্দেশ দেই। পরে অফিসারদের হাসপাতালে পাঠিয়ে ভিকটিমের খোঁজ খবর নেই। মৃত নবজাতককে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ডিএনএ টেষ্ট ও পোস্টমর্টেম এর জন্য পাঠানো হয়েছে। আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।